উখিয়ায় ইজারা আদায়ে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ!

উখিয়া প্রতিনিধি:


দীর্ঘ বছরের পর বছর ধরে অতিরিক্ত হাসিল বা টোল জনগণের উপর চাপিয়ে দেওয়ার কারণে বিক্রেতা এবং ক্রেতাদের নানান দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এতে করে ইজারাদার লাভবান হলেও অতিরিক্ত হাসিল দেওয়ার কারণে একজন বিক্রেতাকে অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করতে হয়েছে এবং ক্রেতাদের পণ্য কেনার ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত দাম দিয়ে কিনতে হয়েছে। এতে করে দরিদ্র শ্রেণির সাধারণ মানুষের দূর্ভোগের শেষ নেই।

যার কারণে উখিয়ার সরকার নির্ধারিত ১০ টি বাজার ছাড়াও একাধিক বাজার সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতা বিক্রেতা আসা কমে গেছে বাজারে। তারা নিজেদের ইচ্ছেমতো বাজার গড়ে তুলেছে। যার কারণে সরকারি রাজস্ব আদায়ের মাত্রা তুলনামূলক হ্রাস পায়। পরবর্তীতে যা মানুষের ঘাড়ে অতিরিক্ত চাপ পড়ে।

এদিকে, উখিয়ার বাজার গুলোতে যখন অতিরিক্ত হাসিল আদায় নিয়ম হয়ে গেছে এবং এর কারণে বিভিন্ন সমস্যার বিষয়টি ব্যবসায়ী নেতাদের নজরে আসে তখন উপজেলার ব্যস্ততম স্টেশন মরিচ্যা বাজারের স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং মরিচ্যা বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমবায় সমিতি মিলে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করে।

যার ফলে মরিচ্যা বাজারে সরকার নির্ধারিত ন্যায্যমূল্যে বাজারের টোল বা হাসিল আদায় করছে বিক্রেতারা। ফলে ব্যবসায়ীসহ সবার প্রশংসায় ভাসছেন বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমবায় সমিতি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা।

সরেজমিনে মরিচ্যা বাজারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগে সরকার নির্ধারিত বাজারের হাসিলের কথা লিখিতভাবে থাকলেও তা কার্যকর হতোনা। কিন্তু আজ প্রথম ন্যায্য মূল্যে হাসিল দিলাম।

বাজারে আসা কয়েকজন বিক্রেতা বলেন, আজ বাজারে আসার আগে মাইকে শুনি, সরকারি তালিকা অনুযায়ী হাসিল দিতে। প্রথমে বিশ্বাস হয়নি, কিন্তু বাজার শেষে নিজে যখন হাসিল দিলাম তখন ঠিকই পেলাম। একজন বিক্রেতার জন্য এ অনুভূতি অন্যরকম।

তারা আরও বলেন, বাজারে বছরের পর বছরের অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের কারণে হাসিলের টাকা তুলতে পণ্যের দাম বেশী ধরতে হতো আর নাহয় কাঙ্খিত মূনাফা নিয়ে বাসায় ফেরা যেতো না। কিন্তু এখন থেকে সেটা আর করতে হবেনা। ক্রেতাদের সাথে দরকষাকষিতেও সমস্যা হবেনা।

সরেজমিনে মরিচ্যা গরু বাজার পরিদর্শন করে কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়, অন্যান্য বাজারের চেয়ে মরিচ্যা বাজারে গরু বিক্রি করলে সরকার নির্ধারিত হাসিল প্রদান করতে হয় এবং ক্রেতাদের কোনো হাসিল দিতে হয়না বলে জানান তারা।

এদিকে,সরকার নির্ধারিত হাসিল আদায়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে মরিচ্যা বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমবায় সমিতির সভাপতি ও ইউপি সদস্য এম মনজুর আলম জানান, মরিচ্যা বাজারে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের ফলে ব্যবসায়ীদের অনেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে পাশ্ববর্তী বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী বাজার সৃষ্টি করেছে। যার ফলে সরকারি রাজস্ব আগের মতো আদায় হয়না। তাই ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান তিনি।